আর এক মাস পর আসছে বর্ষাকাল, শাহপরীর দ্বীপের মানুষের মাঝে বিরাজ করছে আতংক। দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর ধরে টেকনাফের মানচিত্র থেকে আলাদা দ্বীপবাসী। বিছিন্ন হয়ে আছে শাহপরীর দ্বীপের ৩৫ হাজার মানুষের যাতায়াত ব্যবস্থা। যোগাযোগের প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়ক সাগরের পানির তোড়ে বিলীন হয়ে আছে। প্রায় ২ হাজার একর ফসলি জমি পানির নিচে পড়ে আছে। জোয়ার ভাটায় বসবাস করছে শত শত পরিবার। এক প্রকারে বলতে গেলে দীর্ঘ ৪ বছর যাবত দ্বীপবাসীর চোখের কান্না ও দুর্ভোগের শেষ নেই। এই দ্বীপের হাজার হাজার মানুষের প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতে হয় দুর্ভোগের মধ্যে দিয়ে। কারন জোয়ার এলে নৌকায় পারাপার, ভাটা আসলে পায়ে হেটে ৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। এইভাবে বছরের পর বছর চলছে তাদের কপালে দু:খ, দুর্ভোগ ও চোখের পানি কিছুতেই থামছে না। মাঝে মাঝে এই দ্বীপবাসীর মুখে হাসি ফোঁটাতে এগিয়ে আসে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তাও আবার এই হাসি ফোঁটে নির্বাচন এলে। প্রতিশ্রুতি দেয় ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ উন্নয়ন, তছনছ হয়ে যাওয়া সড়কের উন্নয়ন, সাগরে বিলীন হয়ে যাওয়া বাড়ি ঘর নির্মান, এই সমস্ত আশার বানী শুনিয়ে ভোট ভিক্ষা চায়। এর পর যখন নির্বাচন শেষ হয়ে যায়, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সেই আশার বানী নিরাশায় রয়ে যায়। এদিকে সরকার ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ নির্মানের জন্য কোটি কোটি বরাদ্ধ দিয়ে আসছে। অতচ অসাধু ঠিকাদাররা ঠিকসই বেড়িবাঁধ নির্মান না করে লোক দেখানো কাজ চালিয়ে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে মার্চ মাসে বঙ্গোপাসাগরের পানির তোড়ে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিলীন হয়ে যায় শত শত বাড়ি ঘর, হাজার হাজার একর ফসলি জমি, তছনছ হয়ে যায়, যাতায়াতের সড়কটি। এইভাবে দীর্ঘ ৪ বছর ধরে চলছে শাহপরীর দ্বীপের ৩৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগের জীবন। বর্তমানে শাহপরীর দ্বীপ থেকে টেকনাফ পৌছতে একজন মানুষের মাথা পিছু খরচ হয় ৩০০-৪০০টাকা। তার পরও তাদের মনে কোন শান্তি নেই। সব সময় থাকে আতংকে কারন সামনে আসছে বর্ষাকাল।
সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জালিয়া পাড়ার আবুল হোসেন দু:খ প্রকাশ করে বলেন, বর্ষা না আসার আগে বেড়িবাঁধ পুর্ণ নির্মান করা না হলে হয়ত শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়ার এলাকার মত করুন দশা বয়ে আসতে পারে আমাদের কপালে। তাই আমাদের দাবি মাননীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ভাই যদি সরকারের কাছে জরুরি ভাবে হস্তক্ষেপ কামনা করলে আমাদের আশা পুর্ন হবে।
এ ব্যাপারে শাহপরীর দ্বীপ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সোনা আলী বলেন, দ্বীপবাসীকে সাগরের কবল থেকে বাচাঁতে হলে আমাদেরকে দলবত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা অতিসত্তর শাহপরীরদ্বীপ বাসীকে বাচাঁতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে লিখিতভাবে হস্তক্ষেপ কামনা করব।
পাঠকের মতামত: